Robert Browning – Bangla Details

1. The Last ride together 

The Last ride together কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৫৫ সালে Men and women নামক কাব্যগ্রন্থে। যেখানে ৫১ টি কবিতা ছিল। ভিক্টোরিয়ান যুগে এটি ছিল তার একটি বড় ধরনের সাহিত্যকর্মের সংগ্রহ।

দ্যা লাস্ট রাইড টুগেদার (The Last ride together) ভিক্টোরিয়ান কবি Robert Browning এর ১০ স্তবকে রচিত একটি Dramatic Monologue যার প্রতিটি স্তবকে রয়েছে ১১টি করে লাইন। সবাই এটিকে একটি ভালোবাসার কবিতা বললেও এর মূল বিষয় হল মানুষের জীবনের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক নির্ণয় এবং সাফল্য ও ব্যর্থতা নিরুপন করা। আর একটি বিষয় এই কবিতার শুরুতে ফুটে উঠেছে। সেটি হল প্রেমে ব্যর্থ কবি তার প্রেয়সীর কাছে অত্যন্ত আশা নিয়ে আবদার করে তার সাথে শেষবারের মত ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ঘুরতে বের হওয়ার জন্যে। এতে Optimism নামক বিষয়টি আমরা খুজে পাই।

অদ্ভুত সব উপমা আর রুপকের ব্যবহার কবিতাটিকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলেছে। কবিতাটিতে যদিও মাঝে মাঝে তাল ও লয় ভেঙ্গে গিয়েছে তবে ছন্দবিন্যাস ১ম থেকে ১০ স্তবক পর্যন্ত একই আছে আর তা হল aabbcddeeec. কবিতাটির লাইনগুলোর মাত্রা হল iambic Pentameter. কবিতাটিতে একজনই বক্তা আর একজন নির্বাক শ্রোতা রয়েছে। কবিতার শুরুটা হয়েছে আকস্মিকভাবেই। Dramatic Monologue এর সব গুলো গুনই এখানে বিদ্যমান। বক্তার কথা বলার ভঙ্গি ছিল কখনো তিক্ত আবার কখনো মিষ্টি যার মাধ্যমে কবিতাটিতে আশাবাদ ও দূঃখের মাঝে ভারসাম্য আনা হয়েছে।

কবিতার নামটিই যেন বলে দেয় কোন এক প্রাক্তন দম্পতি বা প্রেমিক ও তার প্রেমিকা একসাথে জীবনের শেষবারের মত ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতে বের হয়েছে। কবিতাটি শুরু হয়েছে বক্তার সাথে তার স্ত্রী বা প্রেয়সীর সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটার জন্যে, বক্তার নিজের ভাগ্যকেই দোষারোপ করার মাধ্যমে। এরপরের বক্তার কণ্ঠে ঐ মহিলার প্রতি ভালোবাসা ও প্রশংসা ঝরে পড়েছে এবং তার নামে সে আশীর্বাদও করেছে। তাদের এতদিন একসাথে থাকার স্মৃতিগুলো তার মনে পড়ে যায় এবং বক্তা তার প্রেয়সীকে তার সাথে শেষবারের মত ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘোরার জন্যে অনুরোধ করে।

২য় স্তবকে কবি দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন তার প্রেয়সীর উত্তরের প্রতি। সে কবিকে গর্ব ও দয়া মিশ্রিতভাবে পর্যবেক্ষন করে। কবির কাছে এই উত্তর ছিল তার জীবন ও মৃত্যুর মতই গুরুত্বপূর্ন। অবশেষে সে তার আবদার রাখে ও তারা একসাথে যাত্রা শুরু করে।

৩য় স্তবকে তার প্রাক্তন স্ত্রী অথবা প্রেয়সীর সাথে ভ্রমনটি কতটা আনন্দময় ছিল কবি সে বর্ণনা দেন। তারপর কবি আশেপাশের দৃশ্যের বর্ণনা দেন। সব শেষে বর্ণনা দেন তার সাথে কবির ব্যয় করা মূহুর্তগুলো কতটা আনন্দময় ছিল। কবি একারণে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

৪র্থ স্তবকে কবি অতীতে ফিরে যান। এখানে তিনি অতিক্রান্ত জীবন প্রকৃতির দর্শন নিয়ে কথা বলেন। কবি আর সে হিসেবে যেতে চান না যে কি করলে কি হত বা কি না করলে হয়তো তার ভালোবাসার মানুষটি তাকে ছেড়ে যেতো না। যেহেতু তারা দুজন এখনো একসাথে ভ্রমন করছে তাই নিয়ে কবি ভাবতে চান৷ এই মূহুর্তে তাদের একত্রে ভ্রমনের আনন্দ ভাগাভাগি করতে চান৷

৫ম স্তবকে কবি আগের স্তবকের বিষয় নিয়েই কথা চালিয়ে গেছেন। জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা করেন। কবি নিজেকে তুলনা করেন ঐসকল লোকদের সাথে যারা জীবনে কিছু লাভ করার জন্যে সংগ্রাম করে এবং যারা এতে অকৃতকার্য হয়। তিনি তার প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার যন্ত্রণা লুকানোর জন্যে এটি করেন। সে তার পরাজয়কে মেনে নেন এবং তার জীবনের শেষে মৃত্যুর পরের জীবনে একটি ভালো জীবনের আশা করেন।

৬ষ্ঠ স্তবকে কবি বস্তুগত দুনিয়া থেকে প্রাপ্ত যেকোন আনন্দের তুলনায় ভালোবাসার আনন্দে মগ্ন জীবনকে অনেক বেশি উন্নততর হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই বিষয়টিকে কয়েকটি উপমা ও সংকেতের মাধ্যমে তুলে ধরেন। জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দটিকে তুলনা করেন মানুষ সাফল্যের সর্বোচ্চ যে চূড়ায় আরোহন করতে পারে তার সাথে। একজন দক্ষ রাজনীতিক ও একজন সেনার জীবন তুলে ধরেন। এতো কষ্ট করে তারা কি পায়। প্রথমজন বিদায়ের সময় তার সম্মানে ১০ লাইনের একটি কবিতা আর ২য় জন তার মৃত্যুর পরে তার কীর্তিগাথা সংক্রান্ত কবরের ফলক। কিন্তু ভালোবেসে যিনি সফল হননি বরং ব্যর্থ হয়েছেন তার অর্থাৎ কবির জীবনের প্রাপ্তিটাও তাদের দুজনের চেয়ে অনেক বড়।

৭ম ও ৮ম স্তবকে কবি ভালোবাসাকে বড় কবি ও পরে বড় ভাস্করের কাজের সাথে তুলনা করেছেন। কবিরা তাদের মেধাকে ব্যবহার করে ছন্দ ও কবিতা সৃষ্টি করেন। ভাস্কররা তাদের জীবনের বিশাল একটা সময় ব্যয় করেন ভাস্কর্য তৈরিতে। কবি তার ভালোবাসার এই সময়টাকে তাদের কাজের সাথে তুলনা করেছেন।

৯ম স্তবকে কবি ভাবেন, ভাগ্য তার জন্যে যা রেখেছে সেটা তার জন্যে উপযুক্ত কিনা। জীবনের শ্রেষ্ঠ আনন্দ না পাওয়ায় তিনি ব্যথিত নন কারন তিনি জানেন মৃত্যুর পরে আরেকটি জীবন আছে। সেটিকে কবি বলেছেন দুনিয়ার জীবনের চেয়ে সেটি উত্তম। তিনি এই যুক্তি দেখান দুনিয়ায় যদি সকল আনন্দ পেয়ে যান তবে সেখানে তিনি কি করবেন। সেখানকার জন্যে তিনি আনন্দ রেখে দিতে চান এবং এর চেয়ে বেশি আনন্দ পেতে চান।

শেষ স্তবকে কবি তার প্রাক্তন স্ত্রী/প্রেয়সী দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। এতক্ষণ সে একটি কথাও বলেনি। কবির কাছে মনে হয় তার সাহচর্যের মাধ্যমে কবি স্বৰ্গীয় সুখ লাভ করে। কবি তার কাছে আশা ব্যক্ত করেন এভাবেই যদি তারা দুজন আজীবন ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরে বেড়াতে পারতেন।

১০টি স্তবকের মূল বিষয় :

১ম স্তবকঃ ভাগ্যাহত বক্তার প্রয়সীকে শেষবারের মত ঘোরার গাড়িতে চড়ার আবেদন।
২য় স্তবকঃ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে তার প্রেয়সীর পক্ষ থেকে আসা সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা।
৩য় স্তবকঃ ইউফোরিয়া – মানে কুশল ও আত্মচঞ্চল অবস্থার সৃষ্টি।
৪র্থ স্তবকঃ কি হতে পারতো অথবা কি হয়নি – সেসব নিয়ে কিছুটা ভাবনা।
৫ম স্তবকঃ ব্যর্থতাকে গ্রহন করা। ভালোবাসার পিছনে দেয়া পণ্ডশ্রম এর কথা স্মরণ।
৬ষ্ঠা স্তবকঃ প্রেমেক অভিজ্ঞতা লাভ, যুদ্ধ ও কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বেশি।
৭ম স্তবকঃ কবিরা জানেন কি, জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ জিনিস কোনটি? ভালোবাসার মাঝে বেচে থাকা। 
৮ম স্তবকঃ পক্ককেশ গায়ক আর ভাস্করের দীর্ঘজীবনের কাজের প্রতি কবির উপহাস।
৯ম স্তবকঃ মৃত্যুর পরের জীবনের মহিমা কির্তন।
১০ম স্তবকঃ এই মুহূর্তে কবি বেচে থাকে ভালোবাসতে ও আজীবন তার সাথে ঘুরে বেড়াতে চান।

2. Andrea del Sarto

“Andrea del Sarto” হল Robert Browning এর আর একটি বিখ্যাত Dramatic Monologue. এটি সর্ব প্রথম Robert Browning এর কাব্য সংকলন “Men and woman” এ ১৮৫৫ সালে প্রকাশিত হয়। Browning “Andrea del Sarto কবিতাটি রচনা করেছেন ইতালির বিখ্যাত চিত্রকর Andrea del Sarto জীবন কাহিনি অবলম্বন করে।

Summary of the poem:

এ কবিতায় শিল্পী সার্টোর (Sarto) জীবনের মর্মস্পর্শী একটি দিক উন্মোচিত করার চেষ্টা করেছেন কবি। Andrea del Sarto বাস করতেন ইটালির ফ্লোরেন্স নগরীতে। Sarto ছিলেন রাজা ফ্রান্সিস এর court painter বা প্রাসাদ শিল্পী। সাটো লুক্রেসিয়া (Lucrezia) নামে এক রূপসী রমণীকে বিয়ে করে তার প্রতি খুব বেশি অনুরক্ত হয়ে পড়েছিল। এ রমণী কিন্তু সার্টোকে ভালোবাসতো না মোটেই শুধু স্বার্থ আদায় করে নিত। সার্টোর উপার্জিত সকল সম্পদ কুক্ষীগত করত সে। সে শুধু শিল্পীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করতো। শিল্পীর শিল্পকর্ম বিক্রির সকল টাকা চলে যেতো তার হাতে। লুক্রেসিয়া গোপনে তার এক মামাতো ভাইকে ভালোবাসতো। লুক্রেসিয়া একবার আবদার করে তার প্রেমিক ভাইয়ের জন্য বেশ কটি ছবি এঁকে দেয়ার জন্য। এর জন্য তাঁর পত্নী তার সাথে খারাপ আচরণ করার পরও Andrea বলেছে তুমি শুধু আমার পাশে থাকো, সব ছবি পাবে তুমি। তুমিই আমার অনুপ্রেরণা, তুমি তোমার প্রেমিকের কাছে যাও আপত্তি নেই, তুমি শুধু আমার পানে তাকিয়ে মধুর হাসি বিলিও। আন্দ্রেয়া তার পত্নীর প্রেমে এতোটাই মুগ্ধ ছিল যে, সে শুধু চাইতো লুক্রেসিয়া তার পাশে বসে তার পানে তাকিয়ে একটুখানি হাসি বিলাক। শিল্পী তাঁর পত্নীর হাসির জন্য সবকিছু বিলিয়ে দিয়েছিল। এমনকী ফরাসী রাজা ফ্রান্সিসের সাথে প্রতারণা করে এনেছিল বিপুল অর্থ যে অর্থ দ্বারা সে তৈরি করেছিল লুক্রেসিয়ার জন্য এক মনোরম প্রাসাদ। কবিতার শুরুতেই দেখা যায় লুক্রেসিয়া ঝগড়া করছে আন্দ্রেয়ার সাথে। ঝগড়ার কারণ তার প্রেমিকের বন্ধুকে বেশ কিছু চিত্রকর্ম এঁকে দেয়ার কথা যেগুলো এখনো দেয়া হয়নি, সেগুলো দেয়া হলে সে প্রেমিকের বন্ধুর কাছ থেকে টাকা পাবে। মোটা অংকের অর্থ আর প্রেমিকের কাছেও ভালো থাকবে। শিল্পী বলছেন তার পত্নীকে ঝগড়া করো না মনোরম এই সন্ধ্যায় তুমি আমার পাশে কিছুক্ষণ থাকো, তাহলেই আমি পাবো অনুপ্রেরণা আর দ্রুত শেষ হবে তোমার প্রেমিকের বন্ধুর দেয়া কাজগুলো। আন্দ্রেয়া পত্নীকে এতোটাই ভালবাসতো সে তার বিখ্যাত বহু চিত্রকর্মের মুখমণ্ডলে ফুটে উঠেছে লুক্রেসিয়ার ছবি। তার বহু ম্যাডোনার মডেল হয়েছে লুক্রসিয়া। লোকেরা বলাবলি করতে আন্দ্রের ম্যাডোনা তো ওর স্ত্রীর প্রতিকৃতি। শেষে শিল্পী দুঃখ করে বলেছেন তাঁর পিতামাতা মৃত্যুবরণ করেছে দারিদ্রের কষাঘাতে আর সে বিপুল অর্থ সঞ্চয় করে ঢেলে দিয়েছে রূপসী স্ত্রীর পায়ের তলায়। আন্দ্রেয়া এতোসব সত্ত্বেও তাঁর পত্নীর প্রেমে পাগল। আন্দ্রেয়া বলে সে এ জীবনে আর কিছুই চায় না সে শুধু চায় তার পত্নী তার পাশে বসে একটু হাসি ছড়িয়ে দিক আর বেশি তার নেই।

আন্দ্রে তাঁর সমসাময়িক শিল্পী লিওনার্দো, রাফায়েল ও মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর স্মৃতিচারণ করেছেন। বলেছেন তাদের ভুল ত্রুটির কথা। যে ভুল গুলো কখনো তাঁর দ্বারা হত না কিন্তু একটি ব্যপারে সে বাকিদের তুলনায় ছিলেন ব্যর্থ। আর তা হল তিনি তাঁর ছবিতে আত্মা বা জীবনের ছোয়া দিতে পারতেন না। রাফায়েলের একটি ছবির কথা তিনি বলেছেন যেখানে রাফায়েল ছবিতে হাত আঁকেনি তারপরও তাঁর ছবি ছিল জীবন্ত। আন্দ্রেয়া তাঁর এই ব্যর্থতার জন্যে নিজের স্ত্রীর প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসাকেই দায়ী করেন।

আন্দ্রে আরো বলেছেন তারা খুব ভালো ছবি আঁকতেন। তারা এখনো জান্নাতের শহর জেরুজালেমে গিয়ে আঁকছেন। তিনি মৃত্যুবরন করলে তিনিও তাদের সাথে সেখানে গিয়েও ছবি আঁকবেন। তবে তাঁর বন্ধুদের ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না। কারন তাদের কোন স্ত্রী নেই। অন্যদিকে আন্দ্রেয়া তাঁর স্ত্রীর প্রেমে মশগুল। শেষে শিল্পী বলেন ঐ যে, তোমার প্রেমিক বাইরে তোমার অপেক্ষায় আছে তার কাছে যাও, আমি তোমাকেই ভালোবাসি তুমি আমাকে কিছুটা সময় আর তোমার মধুর হাসি বিলিও। ব্রাউনিং তাঁর এ কবিতায় একজন মহৎ শিল্পীর ভেতরের শিল্পী সত্তার এক চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটিয়েছেন। এত বেদনাদায়ক ঘটনার পরেও শিল্পী তাঁর পত্নীর হাসিটির মর্যাদা দিয়েছেন, এটা একজন সত্যিকারের শিল্পীর পক্ষেই সম্ভব।

3. Fra Lippo Laippi

Fra Lippo Lippi কবিতাটি Robert Browning এর Men and Women গ্রন্থে ১৮৫৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। তিনি পঞ্চমাত্রার [iambic pentameter] অমিত্রাক্ষর ছন্দে [blank verse] ৩৭৬ পঙক্তির এই Dramatic Monologue টি লিখেছেন।

Summary of the poem:

‘Fra Lippo Lippi’ বিখ্যাত ইতালীয় চিত্র শিল্পী। জন্ম ১৪১২ সালে ফ্লোরেন্সে। তার পিতা ছিল একজন কসাই। লিপ্পো দু’বছর বয়স থেকেই পিতৃমাতৃহীন। তার এক চাচী তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে যান এবং তাঁর চাচীর কাছে লালিত পালিত হন। আট বছর বয়সে তাঁকে মঠে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে সেখানে তিনি একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

ইতালী ভ্রমণকালে কবি ফ্লোরেন্সের এক বিখ্যাত গির্জায় লিপ্পোর অংকিত ভার্জিন মেরীর ছবি প্রত্যক্ষ করেন এবং পরবর্তীতে লিপ্পোর জীবন কাহিনী অবলম্বনে এই দীর্ঘ কবিতাটি রচনা করেন। লিপ্পো রাতের বেলা শহরের প্রহরীদের কাছে ধরা পড়ে এবং নিজের পরিচয় দিচ্ছেন মঠের একজন সাধু হিসেবে। লিপ্পো রাতের বেলা পথচারী পতিতার পিছু নেয়ার মত অপকর্ম করতে গিয়ে এই সংকটে পতিত হন৷ সে তাদেরকে জানায় সে আসলে Carmine’s cloister এর একজন সন্নাসী। আর এই মুহুর্তে সে Cosimo of the Medici এর প্রাসাদে আছেন৷ সে পাহারাদারদের ব্যবহারে খুবই বিরক্ত হয় এবং তাদের দলনেতাকে বলে তাঁর উচিত তাদেরকে ব্যবহার ও আচরণ শিক্ষা দিতে। সে তাদেরকে জানায় সে একজন চিত্রকর বটে। কেউ যদি তাকে একটি কয়লার টুকরাও এনে দেয় তাহলে সে তাঁর ছবি হুবহু একে দিতে পারবে। সে বিশ্বাস না করলে আজকে কিভাবে সে এখানে এসেছে তাঁর কাহিনী বর্ণনা করে। সে তাদেরকে জানায় Cosimo of the Medici এর প্রাসাদে তিন সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন সাধু সন্ন্যাসীর চিত্রকর্ম একে চলেছেন। সেই রাতে একটু তাজা বাতাস নেয়ার জন্যে জানালা দিয়ে মাথা বের করে এবং নারী ও পুরুষের আনন্দিত কণ্ঠস্বর শুনতে পায়। এক সময় তিন জন পতিতার উপর তাঁর চোখ পড়ে। শয়তানী মাথাচাড়া দেয় এবং তাদের পিছু নেয় সে। সে যখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল প্রহরীদের হাতে ধরা পড়ে। শেষে প্রহরী প্রধানকে একেবারে ছোটবেলা থেকে তাঁর নিজের জীবন কাহিনী বর্ণনা করেন। কিভাবে সে তাঁর বাবা-মাকে হারিয়েছে, কিভাবে অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে জীবন পার করেছেন সে বর্ণনা দিয়েছেন। এক সময় তাঁর চাচী তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরে কনভেন্টে দিয়ে দেয়। সেখানে সে তেমন কাজ করত না। তাঁর গুরুরা তাকে ল্যাটিন ভাষা শেখাতে চেয়েছিল কিন্তু কোন কাজ হয় নি। সে সারা দিন যেখানে যা কিছু পেত শুধু একেই যেতো। তাঁর অংকনের মাঝে বাস্তবতা ফুটে উঠতো বলে সাধুরা তাকে প্রশংসা করত। কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে লিপ্পো শিল্প কথা ও মানব জীবনের নানা সংকটের দিকটি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন শুধু দেহ সর্বস্ব শিল্প কোন শিল্পই নয়, তিনি মানুষের আত্মিক দিকটির উপর জোর প্রদান করেছেন। শুধু নিখুঁতভাবে মানুষের হাত পা, নাক মুখ অংকন করলেই তা মহৎ শিল্পের প্রকাশ ঘটায় না। শিল্পকর্মে যদি আত্মিকতার ছায়াপাত না ঘটে তা হলে সেটা কোন ছবিই নয়। তিনি সাধু অ্যাঞ্জেলিকো ও সাধু লরেনজোর [Brother Angelico and Brother Lorenzo] মত বড় শিল্পী হতে চান আর এর জন্যে দরকার শিল্পকর্মকে আত্মিকতায় (spiritualize) পূর্ণ করা। লিপ্পো একবার গির্জার দেয়ালে ছবি এঁকে গির্জার অন্যান্য সাধুদের বিরাগভাজন হন। সাধুদের মনের মতো করে ছবি আঁকতে গেলে লিখো দেখেন তাতে প্রাণের স্পর্শ মাত্র থাকে না। এ ছাড়া লিপ্পো গির্জার অন্য একটি দিকও তুলে ধরেছেন তা হলো সেখানে মানুষেরা জরিমানা প্রদান করে আর অপরাধী সহজেই পার পেয়ে যায় ভেট প্রদান করে আর নির্যাতিত পায় না বিচার। নিপীড়িত অসহায় জনদের সামনে দিয়েই নিশ্চিন্তে নিপীড়নকারী পার হয়ে যায়। লিপ্পো বলেছেন এইসব বিষয় প্রত্যক্ষ করে ঈসা (আঃ) হয়তো লজ্জা আর ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে থাকেন। সব শেষে লিপ্পো প্রহরীদের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বলেন তারা যেনো কাউকে তাঁর অপকর্মের তথ্য না দেয়। সে এর প্রায়শ্চিত্ত করবে সেইন্ট অ্যাব্রোজ চার্চের (St. Ambrose’s Church at Florence) দেয়ালের ছবি গুলো আঁকবেন। এছাড়া ফেরেশতা পরিবেষ্টিত অবস্থায় মেরী ও তাঁর সন্তানের ছবিও আঁকবে বলে তাদের থেকে চলে আসে।

4. My Last Duchess

কাব্য ও সাহিত্যসমালোচকেরা আদর্শ Dramatic Monologue হিসেবে যে কবিতাটির উদাহরন সবচেয়ে বেশি দিয়ে থাকেন সেটি হল Robert Browning এর লেখা My Last Duchess. এটি সর্বপ্রথম ১৮৪২ সালে Browning এর Dramatic Lyrics বইয়ে প্রকাশিত হয়। কবিতাটি পঞ্চমাত্রিক [iambic pentameter ] ২৮ জোড়া দ্বিপদী ছন্দে [ rhyming couplets) রচিত।

Summary of the poem:

বক্তা কবিতাটি শুরু করেছেন Ferrara নামে কাউকে সম্বোধন করে। কবিতার ঘটনাটি ঘটেছিল ইতালিয় রেনেসা যুগে। বক্তা অর্থাৎ ডিউক অফ ফেরারা জনাব আলফনসো (২য়) তাদের পারিবারিক ঘটককের কাছে তাঁর মৃত স্ত্রীকে নিয়ে কথা বলছিলেন। এটা বলছিলেন যখন তিনি সিড়ি দিয়ে নিচে নামছিলেন তাঁর হবু শ্বশুর টাইরল এর সাথে বিয়ের ব্যপারে চুক্তি পাকা করতে করতে। কথা বলতে বলতেই একটি শিল্পকর্মের সামনে আসেন তারা। বক্তা পর্দা সরিয়ে একটি মহিলার চিত্রকর্ম বের করেন। শ্রোতাকে বসে দেখতে বললেন এবং পরিচয় করিয়ে দিলেন এটি তাঁর মৃত স্ত্রী।

কবিতাটির পড়লে মনে হয় এটা সামান্য সময়ের কথোপকথন কিন্তু এই সামান্য কথার মাঝেই প্রকাশিত হয়েছে সে যুগের ধনী মানুষের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা নিকৃষ্ট চেহারা। প্রকাশিত হয়েছে তাদের নিপিড়ন, হিংসা, অহংকার, দূর্ণীতি, হত্যা ও যৌতুকের লোভ। এই কবিতার মাধ্যমে সমাজের মানুষের উঁচু নিচুর পার্থক্যটাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

বক্তা কথা শুরু করেন ফ্রা প্যান্ডলফ এর কথা বলে। তাকে ফ্রা বা ভাই সম্বোধন করে শ্রোতাকে বোঝাতে চান শিল্পীদের সাথে তাঁর সখ্যতা। শ্রোতাকে নিজের শিল্প ভাবনা ও শৈল্পিক জ্ঞান বোঝাতে বলেন যে 

“The depth and passion in the earnest glance…….
reproduce the faint half-flush that fades along the throat…”

তারপর বলেন যে এই সকল ছোটখাট বিষয় এতো গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন না। এটা দিয়ে তাঁর অহংবোধ প্রকাশ করেন। তিনি এতো শক্তিশালী একজন ব্যক্তি যে স্ত্রীর ছবিতে গালে যে লাল দাগ দেখা যাচ্ছে সেটা আসলে কি সেই প্রশ্ন করার কেউ সাহস পায় না। সে এতোটাই নিচ ও ভয়ংকর মন মানসিকতার লোক যে তাঁর স্ত্রী যদি কারো দিকে তাকাতো, তাহলে সেটা যৌণ আকাঙ্ক্ষার দৃষ্টি মনে করতেন। এরপর আরো দম্ব ভরে বলেন, তাঁর পরিবারের ১০০ বছরের ঐতিহ্যের কথা, যেটার মূল্য বোঝার ক্ষমতা ডাচেসের (তাঁর মৃত স্ত্রীর) ছিল না।

তাঁর স্ত্রীর গাল – কথা বলা, লজ্জা পাওয়া অথবা রোদ পড়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে লাল হতে পারে কিন্তু সে এতটাই নির্লজ্জ চিন্তার অধিকারী ছিল যে, এটা নিয়েও সে সন্দেহ করত।

সে যেনো কারো প্রতি মিষ্টি হাসি দিয়ে কথা না বলে বা কারো প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে, কারো কাছে লজ্জা না পায়, এটা তাকে বলাটাও ডিউকের কাছে নিচুতা মনে হয়েছে। তাই সে তাকে এক আদেশেই (হত্যার) থামিয়ে দিয়েছে।

এরপর বক্তার সাথে নিচে নামতে নামতে আরেকটি শিল্প কর্ম দেখিয়ে নিজের দম্ভ প্রকাশ করেন। যেখানে গ্রীকদের কল্পিত দেবতা নেপচুন একটি সি হর্সকে প্রশিক্ষন দিচ্ছিল। নিজেকে নেপচুন এবং প্রশিক্ষনরত ঘোড়াটিকে নিজের স্ত্রীর সাথে তুলনা করেন। কবিতাট শেষ হয় বক্তার নিজেকে একজন মহান মানুষ ও বিশাল বড় শিল্পপ্রেমিক হিসেবে প্রমান করার বৃথা চেষ্টার মধ্য দিয়ে।